সেই হারানো প্রাচীন সভ্যতা খুঁজে পাওয়ার ইতিহাসটা তোমাদের বলি- যেটা ধ্বংস হয়েছিল আজ থেকে কয়েক শতাব্দী আগে, যার সন্ধানে নেমেছিলাম আমরা কয়েকজন ভবঘুরে তরুণ একটা জীর্ণ প্রাচীন মানচিত্রই ছিল আমাদের প্রথম ও শেষ ভরসা সেটা নিয়েই একদিন ভোরে আমরা বেরিয়ে পরলাম গন্তব্য অনিশ্চিত হাতে কিছু বিদীর্ণ আঁকাবুকি প্রথমে এবড়ো-থেবড়ো পথ তারপর একে একে পার হই সাত সমুদ্র পেরিয়ে যাই তেরো নদী কত পাহাড়, পর্বত,অরণ্য, সমতল ধীরে ধীরে কেটে যায় বহু দিন-মাস-বছর দুর্বোধ্য চিহ্নের নিশানা ধরে যেতে যেতে আমরা যখন ক্লান্তপ্রায় ক্রমশই ফুরিয়ে আসছিল উদ্যম নিঃশেষিত হয়ে আসছিল সমস্ত প্রাণশক্তি, তখন একদিন হঠাৎ করেই নিজেদের আবিষ্কার করলাম মানচিত্রের ঠিক মাঝখানটায় খুঁজে পেলাম সেই সুবর্ণ বদ্বীপ!
নতুন করে দেহে ফিরে এলো উদ্দীপনা তুমুল বেগে চলতে থাকলো শাবল বেলচা মাটি খুঁড়তে থাকলাম মাটি খুঁড়তে থাকলাম একে একে বেরিয়ে আসতে থাকলো হারানো নগরীর ধ্বংসাবশেষ কিছু দুর্বোধ্য শিলালিপি কিছু প্রাচীন বর্ণমালা! কিন্তু তারা যেন আমাদের আজন্মের পরিচিত! জানিনা ঠিক কত মুহূর্ত পরে আমরা খুঁজে পেলাম সেই অপার্থিব কাঠামো যার চারপাশে চারটা স্তম্ভ! মাঝখানে এক অপূর্ব মিনার! স্মৃতির মিনার!
তারপর আমাদের দ্রুত বদল হতে থাকলো দৃশ্যপট দ্রুত বদলে যেতে থাকল সময় আমরা পিছিয়ে গেলাম কয়েক শতাব্দী এক পরাবাস্তব জগতের ভেতর আটকা পরে গেলাম আমরা কয়েকজন ভবঘুরে তরুণ আমাদের চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে উঠলো সেইসব আশ্চর্য বর্ণমালা! অ আ ক খ! অ আ ক খ! পায়ের নিচে লালচে মাটি হয়ে গেল রাজপথ শাবলটা যেন প্ল্যাকার্ড! কন্ঠে ধ্বনিত হল অদ্ভুত এক ভাষার স্লোগান “রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই” “রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই” তারপর কিছু বুঝে ওঠার আগেই গুলির আওয়াজ তারপর সব অন্ধকার তারপর একটা করুণ সুর- “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি...” যেন দূর থেকে ভেসে আসা কোন বুনো ডাহুকের কান্না তারপর সেল্যুলয়েডে দ্রুত প্রবাহমান অগণিত দৃশ্যকল্পের আগমন; একে একে গড়িয়ে যাওয়া সব দুঃসহ সময় একটা ভাষার অপমৃত্যু একটা জাতির নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া!
একটা সময় ফিরে আসলাম বাস্তব জগতে আদৌ ফিরে আসা কিনা জানিনা শুধু জানলাম আমাদের পূর্বজন্মের পাপের ইতিহাস প্রায়শ্চিত্তের সব দ্বার যেখানে রুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল আগুনে পোড়া জাতি যেখানে আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। জানলাম দুঃখিনী এক একটি বর্ণমালার অভিশাপে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরের ব্যর্থতার গ্লানি মাথায় নিয়ে কিভাবে বিলীন হয়েছিল একটি সভ্যতা সেই পাপ আমাদের ধমনীতে আজও প্রবাহমান।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সূর্য
ভবিষ্যতে কি হবে জানি না তবে তোমার কবিতায় যখন কয়েক শতাব্দী পিছিয়ে এসে শাবলটা প্লাকার্ড হয়ে গেল বিশ্বাস করো সেই আবেগ সেই উৎকন্ঠায় আমিও ভেসে গেলাম। একাত্ম হয়ে গেলাম সেই মিছিলে।..........☼
রনীল
খুব আফসোস হচ্ছে- পাঁচের উপরে যদি মারকিং করা যেত! স্মৃতির মিনার আবিস্কার করার মুহূর্তটিতে গাঁয়ে কাঁটা দিল। বর্তমান থেকে অতীতে গিয়ে আবার যেভাবে ভবিষ্যতে চলে গেলেন- তাতে অসাধারণ না বলে পারছিনা!
খন্দকার নাহিদ হোসেন
আমি এ সংখ্যায় শুরু করছি যে দু একটা কবিতা দিয়ে তার মাঝে অরণীর কবিতা ছিল প্রথম। আর আমারই কিনা মন্তব্য নেই! কোন মানে হয়? কবিতা পছন্দে রইলো। আর চাই কবির অতৃপ্তি টিকে থাকুক...।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।